সূরা আল মাউন এর বর্ণিত শিক্ষাগুলোর সাথে তোমার পরিবারের সামঞ্জস্য বিধান করে গত একমাসের কার্যক্রমের একটি (পোর্টফোলিও) তৈরি

SSC 2023 ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ১০ম সপ্তাহের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কিত ধারণা দেওয়ার নিমিত্তে আজকের আর্টিকেলে এসএসসি ২০২২ ১০ম সপ্তাহ ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান- সূরা আল মাউন এর বর্ণিত শিক্ষাগুলোর সাথে তোমার পরিবারের সামঞ্জস্য বিধান করে গত একমাসের কার্যক্রমের একটি (পোর্টফোলিও) তৈরি নিয়ে আলোচনা করবো

সূরা আল – মাউনের অর্থ:

সুনানে নাসাঈতে হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ “প্রত্যেক ভাল জিনিষই সদকা। ডোল, হাঁড়ি, বালতি ইত্যাদি দেয়াকে রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর আমলে আমরা মাউন নামে অভিহিত করতাম। 

মোটকথা, এর অর্থ হলো যাকাত না দেয়া, আনুগত্য না করা, কোন জিনিষ চাইলে না দেয়া, ছোট ছোট জিনিষ কেউ কিছু সময়ের জন্যে নিতে চাইলে না দেয়া, যেমন চালুনি, কোদাল, দা, কুড়াল, ডেকচি ডোল ইত্যাদি।

সূরা আল-মাউনের ব্যাখ্যাঃ

এই সূরায় কাফির ও মুনাফিকদের কতিপয় বৈশিষ্ট্য ও কাজের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে । আল্লাহ তায়ালা সূরার প্রথম আয়াতে কিয়ামত দিবস ও বিচার দিবস অস্বীকারকারীদের কথা বলেছেন । আর কাফির মুনাফিকরাই মূলত বিচার দিবসের অস্বীকারকারী । তারা তাওহিদ , রিসালাত ও আখিরাতকে অস্বীকার করে অতঃপর সূরার শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তাদের কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন । যেমন , তারা ইয়াতীমদের প্রতি কঠোর , ইয়াতীমদের ধন – সম্পদ তারা জোর করে দখল করে । ইয়াতীমদের কোনোরূপ সাহায্য – সহযোগিতার পরিবর্তে তাদের রূঢ় ও নিষ্ঠুরভাবে তাড়িয়ে দেয় । এমনকি ইয়াতীম , দুঃস্থ , দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তকে নিজেরা তো সাহায্য করেই না বরং অন্যকেও একাজে উৎসাহ দেয় না।

মুনাফিকদের আরও একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো তারা ঠিকমতো সালাত আদায় করে না । বরং তারা সালাত সম্পর্কে উদাসীন। শুধু মুসলমানদের দেখানোর জন্য সালাত আদায় করে । সালাতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে তারা কোনো খবর রাখে না । অথচ সালাতে অবহেলার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে মহাধ্বংস।

১. তুমি কি তাকে প্রত্যক্ষ করেছ যে কর্মফল দিবসকে সবসময় মিথ্যা বলে? (২) সে তো সেই যে অনাথকে রুঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়, (৩) এবং সে অভাবগ্রস্তকে খাবার দানে অন্যদের উৎসাহ দেয় না। (৪) সুতরাং দুর্ভোগ সে সমস্ত নামায আদায়কারীর (৫) যারা তাদের নামায সম্বন্ধে উদাসীন, (৬) যারা লোক দেখানোর জন্য নামাজ বা অন্য কোনো ভালো কর্ম করে (৭) এবং যাকাত দানে অথবা গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোটখাট ধার বা সাহায্য দানে বিরত থাকে।

সুরা মাউনে সত্য অস্বীকারকারীদের কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে মানুষের ঈমানহীনতা, নীচতা ও ঘৃণ্য স্বভাবের প্রকাশ। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে এইসব আচরণ ও বৈশিষ্ট্যকে সত্য ধর্ম ও শেষ বিচারের দিনকে অস্বীকারের কুফল বলে বোঝাতে চেয়েছেন। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ইয়াতিমদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, ক্ষুধার্তদের খাদ্য না দেয়া, নামাজের ব্যাপারে উদাসীনতা ও লোক-দেখানো নামাজ আদায় এবং মানুষকে সহযোগিতা না করা ও এমনকি তাদেরকে দৈনন্দিন জীবনের ছোটখাট উপকরণও না দেয়া। এসবই সুরা মাউনের আলোচ্য বিষয়। এ সুরায় এভাবে কৃপণতা, স্বার্থপরতা ও কপটতার কদর্যতা তুলে ধরা হয়েছে। এইসব স্বভাবের সঙ্গে যেমন সৃষ্টিকুলের বন্ধুত্ব নেই তেম্নি নেই স্রস্টার কোনো সম্পর্ক। কৃপণ, স্বার্থপর ও কপট লোকদের মধ্যে নেই ঈমানের কোনো আলো এবং নেই কোনো দায়িত্ববোধ। এরা খোদায়ি পুরস্কারের প্রতি যেমন আগ্রহী নয় তেমনি খোদায়ি শাস্তির ভয়াবহতা সম্পর্কেও উদাসীন। 

সূরা আল – মাউনের বর্ণিত শিক্ষাগুলোর সাথে তোমার পরিবারের সামঞ্জস্য বিধান করে গত ১ মাসের কার্যক্রমর ১টি ছক (পোর্টফলিও):

যারা অন্যকে ছোট-খাটো সাহায্য করা থেকে নিজেকে বিরত রাখে। আসুন এই ক্ষেত্রে ২টি উদাহরণ কল্পনা করি।

প্রথম উদাহরণ: একজন যুবক সুন্দরভাবে তার নামাজে সূরা মাউন পাঠ করে মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসলো। তার কোনো রকম তাড়াহুড়া ছিল না এবং তিনি শান্ত ভাবে তার বাড়ির পথে ফিরে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় একজন অন্ধ লোক তাকে রাস্তা পার করিয়ে দেওয়ার জন্য সাহায্য চাইলো। যুবকটি কোনো কারণ ছাড়াই সেই অন্ধ ব্যক্তিটির মুখের ওপর তাকে মানা করে দিলেন।

দ্বিতীয় উদাহরণ: একজন মহিলা তার বাসায় নামাজে এই সূরাটি পড়লেন। নামাজ শেষ হতেই হটাৎ কলিং বেলটি বেজে উঠলো। তিনি দরজায় গিয়ে দেখলেন, যে পাশের বাড়ির ভাবি এসেছে। উনি আসলে রান্না করা শুরু করে দেওয়ার পর হটাৎ দেখলো যে তার বাসায় লবন শেষ হয়ে গিয়েছে, আর সেই মুহূর্তে তার কাছে লবন কিনে আনার সময়টি নেই। যেই মহিলাটি এখনই নামাজ পড়ে উঠলেন, তিনি এই সামান্য লবন দিতে মানা করে দিলেন, যদিও এতটুকু লবন দিলে তার সেরকম কোনো ক্ষতি হয়ে যাচ্ছিলো না।

See Also: (১০ম সপ্তাহ) এসএসসি 2023 [১০ম শ্রেণির] ইংলিশ ২য় পত্র এসাইনমেন্ট সমাধান প্রকাশিত, এখানে দেখুন