উত্তর :
শহরের বাড়িতে ছাদ হলো উন্মুক্ত স্থান। ছাদের পরিকল্পনা করে সবজি ও ফলের বাগান করা এবং মুরগি, কোয়েল পাখি ও কবুতর পালন করা যায়। এক্ষেত্রে তারের জাল দিয়ে ঘর তৈরি করে নিতে হয়।
ছাদে যেসব গাছ লাগানো যায়, তা হলো কলম করা আম, পেয়ারা, ডালিম, পেঁপে, বরই ইত্যাদি। সবজির মধ্যে লাউ, সীম, ঝিঙ্গা, কুমড়া, পুঁই, শশা, করল্লা ইত্যাদি। মরিচ, লেবু, টমেটো, বেগুন ইত্যাদি গুল্ম গাছও লাগানো যায়।
ছাদে প্রায় সব ধরনের গাছ লাগানো যায়। ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের গাছ আজকাল দেখা যায়। ফলের ভেতর পেয়ারা, আপেল, লেবু, আম আবার ফুলের ভেতর কসমস, সালভিয়া, ডালিয়া, চন্দ্রমুখী, সূর্যমুখী ইত্যাদি দেখা যায়।
শীতকালে পিটুনিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, সালভিয়া ইত্যাদি ফুল দেখা যায় বেশি। এ ধরনের ফুলগুলো শুষ্কতার ভেতরেও সতেজ থাকে।
তবে গাছ কেবল লাগালেই চলবে না এর যত্ন ও পরিচর্যা করতে হবে। শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদকে যদি সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করা যায় তবে সবুজের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।
নিজের উৎপাদিত সবজি একদিকে যেমন তৃপ্তি দিবে অন্যদিকে অর্থের সাশ্রয় হবে। অবসর সময়কে কাজে লাগানো যাবে। পরিবারের সবাই মিলে কাজ করলে সকলের মধ্যে মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠবে।
সঠিক পরিকল্পনা করে এবং একটু বাড়তি সময় পরিচর্যা করে আপনি বাড়ির ছাদে একটি সুন্দর ফলের বা সবজির বাগান তৈরি করতে পারেন।
ছাদে বাগান করার সময় যেসব দিকগুলো লক্ষ রাখতে হবে
ছাদে বাগান করার সময় লক্ষ রাখতে হবে যেন গাছটি বড় আকারের না হয়। অর্থাৎ ছোট আকারের গাছ লাগাতে হবে এবং ছোট আকারের গাছে যেন বেশি ফল ধরে সে জন্য হাইব্রিড জাতের ফলদ গাছ লাগানো যেতে পারে।
আম্রপালি ও মল্লিকা জাতের আম, পেয়ারা, আপেল কুল, জলপাই, করমচা, শরিফা, আতা, আমড়া, লেবু, ডালিম, পেঁপে, এমনকি কলা গাছও লাগানো যাবে। ছাদ বাগানের প্রথম শর্ত হচ্ছে, গাছ বাছাই।
জেনে, বুঝে, বিশ্বস্ত নার্সারি, বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে গাছ সংগ্রহ করতে হবে। বেঁটে প্রজাতির অতিদ্রুত বর্ধনশীল ও ফল প্রদানকারী গাছই ছাদ বাগানের জন্য উত্তম।
বীজের চারা নয়, কলমের চারা লাগালে অতিদ্রুত ফল পাওয়া যায়। আজকাল বিভিন্ন ফলের গুটি কলম, চোখ কলম ও জোড় কলম পাওয়া যাচ্ছে। ছাদ বাগানের জন্য এসব কলমের চারা সংগ্রহ করতে পারলে ভালো হয়।
টবে আমের মধ্যে আম্রপালি, আলফানসো, বেঁটে প্রজাতির বারোমেসে, লতা, ফিলিপাইনের সুপার সুইট, রাঙ্গু আই চাষ করা যেতে পারে।
লেবুর মধ্যে কাগজিলেবু, কমলা, মালটা, নারকেলি লেবু, কামকোয়াট, ইরানিলেবু, বাতাবিলেবু (অ্যাসেম্বল) টবে খুবই ভালো হয়।
এ ছাড়া কলমের জলপাই, থাইল্যান্ডের মিষ্টি জলপাই, কলমের শরিফা, কলমের কদবেল, ডালিম, স্ট্রবেরি, বাউকুল, আপেলকুল, নারিকেলকুল, লিচু, থাইল্যান্ডের লাল জামরুল, গ্রিন ড্রপ জামরুল, আপেল জামরুল, আঙ্গুর পেয়ারা, থাই পেয়ারা, ফলসা, খুদে জাম, আঁশফল, জোড় কলমের কামরাঙা, এমনকি ক্যারালা ড্রফ প্রজাতির নারিকেলের চাষ করা যেতে পারে।
সঠিক মানের চারা হলে এক বছরের মধ্যেই ফল আসে। আজকাল বিদেশ থেকে উন্নত মানের কিছু চারা কলম দেশে আসছে। ছাদ বাগানের সাধ পূরণ করার জন্য এসব সংগ্রহ করে লাগাতে পারেন।
বাহারি পাতার জামরুল, পেয়ারা, সফেদা গাছও বিভিন্ন নার্সারিতে এখন কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। ছাদে এসব গাছ লাগানো হলে ছাদ বাগানের সৌন্দার্য বৃদ্ধি পায়।