News

PDF শবে কদরের নামাজের নিয়ম, নিয়ত বাংলা, দোয়া, সূরা, তাসবিহ, আমল

কদরের রাতের এবাদত সমূহ বাংলায়

২৭ রমজানের রাত যে আমলগুলো পালন করা হয় তাকে শবে কদরের নামাজ বলা হয়। নারী পুরুষ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ২৬ রমজান শেষ করে সারারাত ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকে। আর এই রতনের এবাদতকে শবে কদরের এবাদত বলে বিবেচনা করা হয়। আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা শবে কদরের নামাজের নিয়ম বাংলা, নামাজের সূরা সমূহ, যে ধরনের দোয়া করা হয় সেগুলো আলোচনা করব। শবে কদরের রাতের তাজবি পড়ার আমলগুলো আলোচনা করা হবে।

লাইলাতুল কদর অথবা শবে কদর বলতে হাজার রজনীর চেয়ে উত্তম। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন একজন মানুষ যদি এই রজনীতে এবাদত বন্দেগী পালন করেন তাহলে সেটি হাজার বছর এর রজনীর চেয়ে উত্তম। তাই আজকের রাতের একটি বিশেষ মূল্যায়ন রয়েছে। বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায় মানুষগুলো শবে কদরের রাতে বিশেষ বিশেষ আমল পালন করে থাকে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া বাংলায়

নামাজ পড়ার নিয়ম Namaz Porar Niom Bangla

শবে কদরের রাতের নামাজকে নফল এবাদত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ এই এবাদত শুধুমাত্র নিজের আমল এবং পরিবারের মঙ্গল কামনার জন্য করা হবে। এবং আল্লাহর কাছে সন্তুষ্টি চেয়ে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা যেতে পারে। এছাড়াও অনেক মানুষজন শবে কদরের রাতে সালাতুত তসবি নামাজ পড়ে থাকেন।

Top Stories

বিশেষ করে এই রজনীতে আপনি যে সকল ইবাদত করেন তা হাজার বছরের রাতের চেয়ে উত্তম বলে বিবেচনা করা হবে। তাই বেশি বেশি এবাদত এবং আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি কামনা করে বেশি বেশি আমল করা উত্তম। আল্লাহতালা সকলকে সঠিকভাবে আমল করার তৌফিক দান করুক।

শবে কদরের নামাজের নিয়ম বাংলায়:

শবে কদরের রাতের যেহেতু কোনো বিশেষ নামাজ নেই তাই প্রতিটি মানুষ চাইলে বেশি বেশি নফল ইবাদত হিসেবে নফল নামাজ আদায় করতে পারে। চাইলে এই নামাজগুলো শুরু করার নিয়ত ভিন্নভাবে করা যেতে পারে।

শবে কদর নামাজের নিয়ত বাংলায়:

নাওয়াইতু আন্‌ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকআতাই সালাতিল লাইলাতিল কাদ্‌রি নফ্‌লে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবর।

লাইলাতুল কদর নামাজ আদায় নিয়ম:

লাইলাতুল কদরে বিশেষ কোনও নামাজের পদ্ধতি নেই। লাইলাতুল কদরের রাতে নামাজ দুই রাকাত করে যত সুন্দর করে, যত মনোযোগ সহকারে পড়া যায় ততই ভালো। দুই রাকাত, দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি পড়তে পারবেন। এই রাতে কোরআন তেলাওয়াত করবেন। বেশি বেশি দোয়া পড়বেন। ইস্তেগফার পড়বেন। তওবা করবেন।

লাইলাতুল কদরের সূরা

ইন্না আনযালনাহু ফী লাইলাতিল কদর। অমা আদরা কামা লাইলাতুল কাদর। লাইলাতুল কাদরি খাইরুম মিন আলফি শাহর। তানাযযালুল মালায়িকাতু অররূহু ফীহা বিইযনি রাব্বিহিম মিন কুল্লি আমরি। সালামুন হিয়া হাত্তামাত্ব লাই’ল ফাজ্বর।

বাংলা অর্থ: 

নিশ্চয় আমি এটা (কুরআন) কদর রাতে নাযিল করলাম। আর আপনি কি জানেন, মহিমান্বিত রাত কি? কদর (মহিমান্বিত) রাত, হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে প্রত্যেক বরকত পূর্ণ বিষয় নিয়ে ফেরেশতা ও রূহ (জিবরাঈল) (দুনিয়াতে) অবতীর্ণ হয়, স্বীয় রবের নির্দেশে। সে রাতে সম্পূর্ণ শান্তি, ফজর পর্যন্ত বিরাজিত থাকে।

শবে কদরের বিশেষ দোয়া:

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ, শবে কদরের রাতে আমার কোন দোয়াটি পড়া উচিত?’ তিনি তাঁকে পড়ার জন্য নির্দেশ দিলেন-

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’

কদরের রাতের তাসবিহ

কোরআন নাজিলের মাসে ক্ষমা ও রহমত কামনার কোরআনি দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়া যেতে পারে। তাহলো-

১. رَبَّنَا اكْشِفْ عَنَّا الْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُونَ

উচ্চারণ : ‘রাব্বানাকশিফ আন্নাল আজাবা ইন্না মুমিনুন।’

২. رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ

উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।

৩. رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।’

৪. رَبِّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْ لِيْ

উচ্চারণ : ‘রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগফিরলি।’

৫. رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ : ‘রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।’

শবে কদরের আমল সমূহ বাংলায়:

শবে কদরের রাতে কি কি আমল করবেন তা দুইভাগে ভাগ করা যেতে পারে। (ক) নফল নামায (খ) দোয়া ও যিকির।

যেসব যিকির ও তাসবীহ তাহলীল করা যেতে পারে না নিচে দেওয়া হলঃ

  • ইস্তেগফার করা
  • দুরুদ শরীফ পাঠ করা।
  • বেশি করে কুরআন পাঠ করা।
  • অধিক দান-সদকা করা।
  • অতীতের সকল গুন্নাহ ও পাপকাজের জন্য লজ্জিত হয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া।
  • আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করা। যেমন: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্ হামদু ল্লিল্লাহ, সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আস্তাগফিরুল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুউআতা ইল্লা বিল্লাহ
  • কুরআন তিলাওয়াত করা।

শবে কদরের রাতে আপনি যদি একজন সফল মুমিনদের ব্যক্তি হতে চান তাহলে এ রাতে ঘুম বাদ দিয়ে সারারাত আল্লাহতালার ইবাদতে মশগুল থাকুন। এবাদত বন্দেগি শেষে সেহরি খাওয়ার পর, ফজর নামাজ পড়ে তারপর ঘুমাবেন। আপনি আল্লাহ তায়ালার নিকট আপনার নিজের ভাগ্যের পরীক্ষা দিন এবং বিশেষ বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করে আল্লাহর কাছে আপনার নিজের জন্য ভালো কিছু আশা করুন যাতে আল্লাহ তাআলা আপনাদেরকে সঠিক পথে তৌফিক দান করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *