৯ম শ্রেণীর পৌরনীতি ও নাগরিকতা অ্যাসাইনমেন্ট নবম সমাধান সপ্তাহের।
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ:
‘রাষ্ট্রের উৎপত্তি ও রাষ্ট্র গঠনের উপাদান’- এই শিরোনামে নিম্নের সংকেত অনুসরণ করে সর্বোচ্চ ৩০০ শব্দের মধ্যে একটি প্রবন্ধ লেখ
সংকেত:
- রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে তোমার দৃষ্টিতে অধিক গ্রহণযোগ্য মতবাদ
- মতবাদটি অধিক গ্রহণযোগ্য মনে হওয়ার যৌক্তিক কারণ
- রাষ্ট্র গঠনের উপাদান সমূহ
- তোমার দৃষ্টিতে রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান
- উক্ত উপাদানটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হওয়ার যৌক্তিক ব্যাখ্যা
নির্দেশনা:
- পাঠ্যপুস্তক এর পাশাপাশি অন্য বইয়ের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে
- পত্রপত্রিকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে ও ইন্টারনেটের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
প্রথম অধ্যায়ের পৌরনীতি ও নাগরিকতা অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ ২
প্রিয় শিক্ষার্থীরা নবম শ্রেণীর নবমতম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট এর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। আমরা অতি সাধারন ভাবে আপনাদের জানাতে চাচ্ছি যে আমরাও অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন গুলো আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে।
প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর থেকেই আমরা এসাইনমেন্ট সমাধান করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদেরকে প্রতি বিষয় ধরে ধরে সমাধান করে দিতে হয় তাই হয়তো কোন সমাধান করতে একটু দেরি হতে পারে।
সে ক্ষেত্রে আপনারা আবারও আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন এবং আপনার কাঙ্খিত বিষয়ের সমাধান নিয়ে যাবেন।
আমরা আশা করি আপনারা সকলে ধৈর্যসহকারে পুনরায় আমাদের পেজটি ভিজিট করবেন। যদি মনে করেন অ্যাসাইনমেন্টে কোন সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন।
পৌরনীতি ও নাগরিকতা নবম শ্রেণীর অ্যাসাইনমেন্ট 2021
ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত এসাইনমেন্ট এর কাজ আজ থেকে ৮ সপ্তাহ পূর্বে শুরু হয়েছিল। গত ৮ সপ্তাহ ধরে চলমান এই এসএমএস এর কাজের মধ্যে পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ে আজকে দ্বিতীয় কাজ দেওয়া হল।
প্রতিটি এসাইনমেন্ট এর কভার পেজ এ অবশ্যই আপনি অ্যাপার্টমেন্টের কততম কাজ এবং কত তম সপ্তাহ এগুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরতে হবে।
কভার পেজ যদি স্পষ্ট বোঝা না যায় তাহলে শিক্ষকগণ নাম্বার না দেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাবে।
অবশ্যই সকলকে কভার পেজের প্রতি সচেতন থাকতে হবে এবং স্পষ্ট ভাবে নাম রোল ও বিষয়ের নাম এবং এসাইনমেন্ট সপ্তাহ উল্লেখ করতে হবে।
এযাবতকালের সকল রেকর্ড ভেঙে এবছর তথাগত বছর থেকে শুরু হওয়া শিক্ষাকার্যক্রম অনলাইন ভিত্তিক চলতেছে।
এ জিনিসটা আমরা কোনমতেই দুই বছর আগেও চিন্তা করতে পারেনি কিন্তু আজ এটি বাস্তবে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
নবম শ্রেণির পৌরনীতি ও নাগরিকতা নবম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট সমাধান 2021
তোমরা অবশ্যই জেনে থাকবেন যে পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়টি একটি ও বাস্তবধর্মী সকল কাজ নিয়ে পরিচালিত হয়। তাই শিক্ষকগণ চাইলেও কখনো সহৃদয়বান হয়ে নম্বর দিতে পারেনি।
চলুন তাহলে আজকের নবম শ্রেণির নবম সপ্তাহের পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট নির্ধারিত কাজে সমাধান করা যাক। এখানে এসাইনমেন্ট তৈরি করার পূর্বে অবশ্যই দেখতে হবে যে 300 শব্দের মধ্যে প্রবন্ধ টি হতে হবে।
আজকে প্রবন্ধের শিরোনাম ”রাষ্ট্রের উৎপত্তি ও রাষ্ট্র গঠনের উপাদান” আর সংকেত গুলো খুব সুন্দর ভাবে দেওয়া আছে। আমরা আস্তে আস্তে অ্যাসাইনমেন্টের সমাধানটি সম্পন্ন করি।
রাষ্ট্রের উৎপত্তিঃ
রাষ্ট্র কখন, কিভাবে উৎপত্তি লাভ করছে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা অতীত ইতিহাস ও রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে কতগুলো মতবাদ প্রদান করেছেন। তন্মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলঃ
১।ঐশী মতবাদ।
২।বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদ
৩।সামাজিক চুক্তি মতবাদ ও
৪।ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ।
ঐশী মতবাদঃ
এটি রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কে সবচেয়ে পুরাতন মতবাদ। এ মতবাদে বলা হয়- বিধাতা বা স্রষ্টা স্বয়ং রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছেন এবং রাষ্ট্রকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি শাসক প্রেরণ করেছেন। শাসক তার প্রতিনিধি এবং তিনি তার কাজের জন্য একমাত্র স্রষ্টা বা বিধাতার নিকট দায়ী, জনগণের নিকট নয়। শাসক যেহেতু স্রষ্টার নির্দেশে কাজ করে, সেহেতু শাসকের আদেশ অমান্য করার অর্থ বিধাতার নির্দেশ অমান্য করা। এ মতবাদ অনুসারে শাসক একাধারে যেমন রাষ্ট্রপ্রধান এবং অন্যদিকে তিনিই আবার ধর্মীয় প্রধান। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এই মতবাদকে বিপজ্জনক, অগণতান্ত্রিক ও অযৌক্তিক বলে সমালোচনা করেন। তাদের মতে যেখানে জনগণের নিকট শাসক দল থাকে না সেখানে স্বৈরশাসন সৃষ্টি হয়। এই মতবাদকে বিধাতার সৃষ্টি মূলক মতবাদ বলা হয়।
বল বা শক্তি প্রয়োগ মতবাদঃ
এই মতবাদের মূল বক্তব্য হল- বল বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে এবং শক্তির জোরে রাষ্ট্র টিকে আছে। এ মতবাদে বলা হয় – সমাজের বলশালী ব্যক্তিরা যুদ্ধ-বিগ্রহ বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দুর্বলের উপর নিজেদের আধিপত্য স্থাপনের মাধ্যমে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা করে। এ মতবাদে আরও বলা হয় – সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এভাবেই যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যমে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। সমালোচকরা এই মতবাদকে অযৌক্তিক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলেন, শক্তির মাধ্যমে যদি রাষ্ট্র টিকে থাকতো তাহলে শক্তিশালী রাষ্ট্রের পাশাপাশি সামরিক দিক থেকে দুর্বল রাষ্ট্রটিকে থাকতে পারত না। আসলে শক্তির জোরে নয় বরং সম্মতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র গড়ে ওঠে এবং টিকে থাকে।
ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদঃ
এই মতবাদের মূল বক্তব্য হলো রাষ্ট্র কোন একটি বিশেষ কারণে হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়নি। দীর্ঘদিনের বিবর্তনের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন শক্তির উপাদান ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে হতে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে। যেসব উপাদান এর কার্যকারিতা ফলে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে সেগুলো হলো – সংস্কৃতের বন্ধন, রক্তের বন্ধন, ধর্মের বন্ধন, যুদ্ধ-বিগ্রহ, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চেতনা ও কার্যকলাপ। ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ সম্পর্কে ডঃ গার্নার বলেছেন, রাষ্ট্র বিধাতার সৃষ্টি নয়, বল প্রয়োগের মাধ্যমেও সৃষ্টি হয়নি বরং ঐতিহাসিক ক্রমবিবর্তনের ফলে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে। রাষ্ট্রের উৎপত্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন মতবাদ এর মধ্যে ঐতিহাসিক বা বিবর্তনমূলক মতবাদ সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য মতবাদ। এ মতবাদে রাষ্ট্রের উৎপত্তি সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। আসলে বর্তমানের রাষ্ট্র বহুযুগের বিবর্তনের ফল।
রাষ্ট্র গঠনের উপাদান সমূহঃ
রাষ্ট্র গঠনের উপাদান চারটি। যথা-
১। জনসমষ্টি,
২। নির্দিষ্ট ভূখন্ড,
৩। সরকার,
৪।সার্বভৌমত্ব।
জনসমষ্টিঃ
রাষ্ট্র গঠনের অপরিহার্য উপাদান জনসমষ্টিকোন ভূখণ্ড একটি জনগোষ্ঠী স্থায়ীভাবে বসবাস করলেই রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে । তবে একটি রাষ্ট্র গঠনের জন্য কি পরিমাণ জনসমষ্টি প্রয়োজন এর কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই। যেমন বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৯ কোটি, ভারতে ১২১ কোটি, ব্রুনাইয়ে প্রায় ২ লক্ষ। তবে রাষ্ট্র বিজ্ঞানীদের মতে, একটি রাষ্ট্রের সম্পদ এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ জনসংখ্যা থাকা বাঞ্ছনীয়।
নির্দিষ্ট ভূখন্ডঃ
রাষ্ট্র গঠনের জন্য নির্দিষ্ট ভূখন্ড আবশ্যক। ভূখন্ড বলতে একটি রাষ্ট্রের স্থলভাগ, জলভাগ ও আকাশসীমা কে বোঝায়। রাষ্ট্রের ভূখণ্ড ছোট বা বড় হতে পারে। যেমন বাংলাদেশের ক্ষেত্রফল 2015 সালের 31 জুলাই 1,47,570 বর্গ কিলোমিটার। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত স্থলসীমানা চুক্তি অনুযায়ী2015 সালের 31 জুলাই দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক ছিটমহল বিনিময়ের ফলে বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডে10, 041.25 একর জমি যোগ হয়েছে। এছাড়া বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমার ও ভারতের সাথে আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্রসীমা মামলার রায় বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার আয়তন বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানের সমুদ্রে 1 লক্ষ 11 হাজার 813 বর্গ কিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চলে বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গণচীন, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা প্রকৃতি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রফল বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বড়।
সরকারঃ
রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সরকার। সরকার ছাড়া রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যক্রম বলি সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সরকার গঠিত হয় তিনটি বিভাগ নিয়ে যথা- আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ, বিচার বিভাগ। সকল রাষ্ট্রের সরকার গঠন একই রকম হলেও রাষ্ট্রপতিদের সরকারের রূপ ভিন্ন ভিন্ন। যেমন বাংলাদেশের সংসদীয় সরকার আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার। রাষ্ট্র যাবতীয় শাসনকাজ সরকারি পরিচালনা করে থাকে।
সার্বভৌমত্বঃ
রাষ্ট্র গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। এটি রাষ্ট্রের চরম ও পরম ও সর্বোচ্চ ক্ষমতা। এর দুটি দিক রয়েছে যথা- অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব। অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের সাহায্যে রাষ্ট্র দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন আদেশ-নির্দেশ জারির মাধ্যমে ব্যক্তি ও সংস্থার উপর কর্তৃত্ব করে। অন্যদিকে বাহ্যিক সার্বভৌমত্বের মাধ্যমে রাষ্ট্রদোহিতা আত্মনিয়ন্ত্রণ থেকে দেশকে মুক্ত রাখে।
‘রাষ্ট্রের উৎপত্তি ও রাষ্ট্র গঠনের উপাদান’- এই শিরোনামে নিম্নের সংকেত অনুসরণ করে সর্বোচ্চ ৩০০ শব্দের মধ্যে একটি প্রবন্ধ
স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হলো একটি অবস্তুগত বৈধ সত্তা, যা একটি কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক শাষিত এবং যার একটি নির্দিষ্ট ভূখন্ড সার্বভৌম বিদ্যমান। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী একটি স্থায়ী জনগোষ্ঠীর নির্দিষ্ট সীমা সরকার এবং অপর কোন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের যোগ্যতা থাকলে তাকে সার্বভৌম রাষ্ট্র বলা হয়। সাধারণ অর্থে, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র অন্য কোন শক্তি বা রাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল বা অন্য রাষ্ট্র দ্বারা প্রভাবিত নয়। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিলুপ্ত একটি আইনগত প্রত্যয়। রাষ্ট্র সত্তার ঘোষণামূলক তত্ত্ব অনুযায়ী, অন্য সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ছাড়াও একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অস্তিত্ব থাকতে পারে। তবে অস্বীকৃত রাষ্ট্র সমূহ কখনো কখনো অন্য সার্বভৌম রাষ্ট্রের সাথে চুক্তি সম্পাদন বা কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে অপরাগ হয়। তাই বলা যায়, রাষ্ট্রের চারটি উপাদানের মধ্যে সার্বভৌমত্ব সবচেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।