তথ্য ও যােগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে সৌরজগতের দৃশ্যাবলী অবলোকনের জন্য আগত দর্শনার্থীদের হাতের আঙ্গুলের ছাপ ও মানব সাদৃশ্য যন্ত্র দ্বারা নিরাপত্তা প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তিসমূহের ব্যাখ্যা
এইচএসসি 2022 তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ষষ্ঠ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন তুলে ধরা হলো।
অ্যাসাইনমেন্টঃ ০১
প্রথম অধ্যায়: তথ্য ও যোগাযােগ প্রযুক্তিঃ বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
অ্যাসাইনমেন্টঃ
তথ্য ও যােগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে সৌরজগতের দৃশ্যাবলী অবলোকনের জন্য আগত দর্শনার্থীদের হাতের আঙ্গুলের ছাপ ও মানব সাদৃশ্য যন্ত্র দ্বারা নিরাপত্তা প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তিসমূহের ব্যাখ্যা।
শিখনফলঃ
- প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব মূল্যায়ন করতে পারবে
- তথ্য ও যােগাযোেগ প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতা বিশ্লেষণ করতে পারবে
নির্দেশনাঃ
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ধারণা এবং বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ ও প্রভাব
- বায়ােমেট্রিক্সের ধারণা, প্রকারভেদ ও প্রয়ােগের ক্ষেত্রসমূহ
- রােবটিকসের ধারণা এবং প্রয়ােগের ক্ষেত্রসমূহ
এইচএসসি 2022 তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ৬ষ্ঠ সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ধারণা এবং বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ ও প্রভাব:-
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো কম্পিউটার সিমুলেশনের সাহায্যে তৈরি ত্রিমাত্রিক পরিবেশ যা ব্যবহারকারীর কাছে সত্য ও বাস্তব বলে মনে হয়। একে সিমুলেটেড পরিবেশও বলা হয়। কম্পিউটার প্রযুক্তি ও অনুকরণবিদ্যার প্রয়োগে কৃত্রিম পরিবেশকে এমনভাবে তৈরি ও উপস্থাপন করা হয়,যা ব্যবহারকারীর কাছে সত্য ও বাস্তব বলে মনে হয়। ১৯৬২ সালে মর্টন এল হেলগি তাঁর তৈরি সেন্সোরামা স্টিমুলেটর নামক যন্ত্রের মাধ্যমে প্রথম ভার্চুয়াল রিয়েলিটির আত্নপ্রকাশ করেন।
প্রথাগত ইউজার-ইন্টারফেসের বিপরীতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারকারীকে একটি অভিজ্ঞতার ভিতরে রাখে। ব্যবহারকারী শুধুমাত্র স্ক্রিন দেখেন না বরং 3D-ওয়ার্ল্ডে নিমগ্ন এবং ইন্টারঅ্যাক্ট করতে সক্ষম হন। দৃষ্টি, শ্রবণশক্তি, স্পর্শ এমনকি গন্ধের মতো যথাসম্ভব ইন্দ্রিয়ের অনুকরণের মাধ্যমে কম্পিউটারটি এই কৃত্রিম বিশ্বে দারোয়ান হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার/প্রয়োগ ক্ষেত্রঃ
প্রকৌশল ও বিজ্ঞানঃ বিজ্ঞানের জটিল বিষয় নিয়ে গবেষণা, গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রসেসের সিমুলেশনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যপক প্রয়োগ রয়েছে।
শিক্ষাক্ষেত্রঃ শিক্ষা গ্রহণ ও প্রদানের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অনেক প্রভাব রয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার জটিল বিষয়গুলো সহজে উপস্থাপন এবং পাঠদানের বিষয়টি সহজে চিত্তাকর্ষক ও হৃদয়গ্রাহী করা যায়।
চিকিৎসাক্ষেত্রঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারের অন্যতম বৃহৎ ক্ষেত্র হচ্ছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। এই প্রযুক্তিতে সিমুলেশনের মাধ্যমে জটিল সার্জারি অত্যন্ত সূক্ষভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। চিকিৎসকদের নতুন চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা অর্জন বা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
খেলাধুলা ও বিনোদনঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কল্যাণে কম্পিউটারের সাথে কোন খেলায় অংশগ্রহন বা কম্পিউটার সিস্টেমে অনুশীলন সহজ হচ্ছে। দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক সিমুলেশনের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নির্ভর ছবি যা সবার কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে
ব্যবসা ও বাণিজ্যঃ কোন পণ্য উৎপাদনের পূর্বে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে পণ্যের মান পরীক্ষা করা যায়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ভোক্তা বা ক্রেতার কাছে পণ্যের ব্যবহার পদ্ধতি ও অন্যান্য সুবিধাসমূহ সহজে উপস্থাপন করা যায়। এছাড়া ব্যবসায়িক কর্মচারীদের প্রশিক্ষণও প্রদান।
ড্রাইভিং নির্দেশনাঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে গাড়ি চালনার বিভিন্ন বিষয়ে বাস্তব ধারণা লাভ করা যায়। ফলে প্রশিক্ষণার্থী দ্রুত গাড়ি চালনা শিখতে পারছে। এক্ষেত্রে ঝুঁকির পরিমাণও কমে যাচ্ছে।
সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগ করে সেনাবাহিনীতে অস্ত্র চালনা এবং আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহারে কম সময়ে নিখুঁতভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করা যায়।
বিমানবাহিনী প্রশিক্ষণঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগ করে বিমানবাহিনীতে বিমান চালনা প্রশিক্ষণ এবং প্যারাস্যুট ব্যবহারে প্রশিক্ষণ প্রদান করা যায়।
নৌবাহিনী প্রশিক্ষণঃ নৌবাহিনীতে যুদ্ধ প্রশিক্ষণ এবং ডুবোজাহাজ চালনা প্রশিক্ষণে ব্যপকভাবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়।
মহাকাশ অভিযানঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগ করে ত্রিমাত্রিক সিমুলেশনের মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ছাত্র-শিক্ষকরা সৌরজগৎ এর গ্রহ বা গ্রহাণুপুঞ্জের অবস্থান, গঠনপ্রকৃতি ও গতিবিধি, গ্রহের মধ্যস্থিত বিভিন্ন বস্তু বা প্রাণের উপস্থিতি ইত্যাদি সম্পর্কে সহজেই ধারণা অর্জন করতে পারে।
প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাবঃ
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক প্রভাবঃ
১। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ক্ষেতে জটিল বিষয়গুলো ত্রিমাত্রিক চিত্রের মাধ্যমে আকর্ষণীয় ও হৃদয়গ্রাহী করা যায়।
২। ঝুঁকিপূর্ণ উৎপাদন ব্যবস্থায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে উৎপাদন ব্যবস্থা সহজ ও সরল করা সম্ভব।
৩। বাস্তবায়নের পূর্বে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে সিমুলেশনের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে খরচ কমানো যায়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নেতিবাচক প্রভাবঃ
১। বাস্তবের স্বাদ পাওয়ায় কল্পনার রাজ্যে বিচরন করতে পারে।
২। যেহেতু ভার্চুয়াল রিয়েলিটি একটি কম্পিউটার সিস্টেম তাই এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
৩। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যয়বহুল হওয়ায় সবাই এই প্রযুক্তি ব্যবহারে সুবিধা পায় না। ফলে ডিজিটাল বৈষম্য তৈরি হয়।
বায়ােমেট্রিক্সের ধারণা, প্রকারভেদ ও প্রয়ােগের ক্ষেত্রসমূহ:-
ব্যক্তি সনাক্তকরণের প্রযুক্তি হচ্ছে বায়ােমেট্রিক্স। বায়ােমেট্রিক্স হচ্ছে এক ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামাে, আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা যায়। বায়ােমেট্রিক্স সিস্টেমে ব্যক্তি সনাক্তকরণে যেসব বায়ােলজিক্যাল ডেটা ব্যবহৃত হয় তা হলাে- মুখমন্ডল, হাতের আঙ্গুল, হাতের রেখা, রেটিনা ও আইরিস, স্বাক্ষর, শিরা এবং কণ্ঠস্বর।
বায়োমেট্রিক্স কিভাবে কাজ করে?
একটি বায়ােমেট্রিক ডিভাইস কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যগুলােকে ডিজিটাল কোডে রূপান্তর করে এবং এই কোডকে কম্পিউটারে সংরক্ষিত কোডের সাথে তুলনা বা মিল করে। যদি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত কোড কম্পিউটারে সংরক্ষিত কোডের সাথে মিলে যায় তবে তাকে ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি দেয় বা তাকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
বায়ােমেট্রিক্স একটি আচরণিক বৈশিষ্ট্য নির্ভর প্রযুক্তি
বায়ােমেট্রিক্স হচ্ছে এক ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামাে, আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত বা শনাক্তকরণ করা যায়। সংজ্ঞা থেকে দেখা যায় বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তিটি একান্তই শারীরিক কাঠামাে ও আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি কেন্দ্রিক। সুতরাং এটি হলাে একটি আচরণিক নির্ভর প্রযুক্তি।
বায়োমেট্রিক্স এর প্রকারভেদ:
দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যথা–
ক. দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি
- মুখ (Face) : মুখ বা চেহারার বৈশিষ্ট্য (facial characteristics) বিশ্লেষণ করা।
- ফিঙ্গারপ্রিন্ট (Fingerprint) : প্রত্যেকের আলাদা একক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হাতের ছাপ বিশ্লেষণ করা।
- হ্যান্ড জিওমেটরি (Hand Geometry) : হাতের গঠন (shape) এবং আঙ্গুলের দৈর্ঘ্যের মাপ বিশ্লেষণ করা।
- আইরিস (Iris) : চোখের মণির চারিপার্শ্বে বেষ্টিত রঙিন বলয় (colored ring) বিশ্লেষণ করা।
- রেটিনা (Retina) : চোখের পিছনের অক্ষিপটের (রেটিনার) মাপ বিশ্লেষণ করা।
- শিরা (Vein) : হাত এবং কব্জির শিরার প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করা।
খ. আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি
- কণ্ঠস্বর (Voice) : প্রত্যেকের কণ্ঠের ধ্বনির বৈশিষ্ট্য, সুরের উচ্চতা, সুরের মূর্ছনা, স্পন্দনের দ্রুততা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করা।
- সিগনেচার (Signature) : হাতের দস্তখত বিশ্লেষণ করা।
- টাইপিং কী স্ট্রোক (Typing Keystroke) : নির্দিষ্ট কোন পাসওয়ার্ড যা টাইপ করে এন্ট্রি করা হয় এবং বিশ্লেষণ করা
বায়ােমেট্রিক্সের ব্যবহার
- কম্পিউটার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে
- অপরাধী ও ব্যক্তি শনাক্তকরণে
- পাসপাের্ট তৈরিতে
- মােবাইল সিম ক্রয়ে গ্রাহককে সহায়তা করে
- পরিচয়পত্র তৈরিতে
- বাংলাদেশে মেশিন রিডেবল পাসপাের্ট ইত্যাদিতে ব্যবহার হয়।
আইন শৃঙ্খলা এবং বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে এ প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন বিভাগেও বায়ােমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার গাড়ি, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বায়ােমেট্রিক্স নিরাপত্তা পদ্ধতি ব্যবহার হচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বায়ােমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন: জাতীয় পরিচয় পত্রে, সিম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সনাক্তকরণের জন্য আঙ্গুলের ছাপ নেয়া হয়। বায়ােমট্রিক্স নিয়ে এখন বড় বড় কম্পিউটার ও সফ্টওয়্যার কোম্পানি গবেষণা করছে। বায়ােমেট্রিক প্রযুক্তিতে চোখের মণি শনাক্ত করার যন্ত্রটি তৈরি করেছে এনসিআর নামের একটি নেটওয়ার্ক কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান। বিজ্ঞানের এই নতুন প্রযুক্তিটা উদ্ভাবন করেছে সেন্সর ইনকর্পোরেটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে দৈহিক গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিমাপের ভিত্তিতে কোনাে ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে শনাক্ত করা যায়। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বায়ােমেট্রিক্স প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে মানুষের বায়ােলজিক্যাল ডেটা কম্পিউটারের ডেটাবেজে সংরক্ষিত করে রাখা হয় এবং পরবর্তীতে এসব ডেটা নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিলিয়ে দেখা হয়। ডেটা মিল পেলে ব্যক্তির বৈধতা নিশ্চিত হয়।
রােবটিকসের ধারণা এবং প্রয়ােগের ক্ষেত্রসমূহ:-
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence-AI):
আর্টিফিসিয়াল(Artificial) অর্থ হলো কৃত্রিম এবং ইনটেলিজেন্স(Intelligence) অর্থ হলো বুদ্ধিমত্তা। অর্থাৎ আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স মানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
মানুষ যেভাবে চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নেয়, কৃত্তিম উপায়ে কোন যন্ত্র যদি সেভাবে চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তখন সেই যন্ত্রের বুদ্ধিমত্তাকে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়। অন্যভবে বলা যায়- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে মেশিনে সিমুলেশন করা যা মানুষের মত চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক হলেন বৃটিশ বিজ্ঞানী ও গণিতবিদ অ্যালান টুরিং(Alan Mathison Turing)। ১৯৫০ সালে তার আবিষ্কৃত “টুরিং টেস্ট” কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ধারণার ভিত্তি স্থাপন করে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুধুমাত্র কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি অংশ নয় বরং এটি বিশাল একটি শাখা যেখানে আরও অনেক ফ্যাক্টর প্রয়োজন হয় এবং অবদান রাখে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করার জন্য প্রথমে আমাদের জানতে হবে বুদ্ধি কিসের সমন্বয়ে তৈরি। বুদ্ধি আমাদের মস্তিষ্কের একটি অপরিহার্য অংশ যা যুক্তি, শেখা, সমস্যা সমাধানের উপলব্ধি, ভাষা বোঝা ইত্যাদির সমন্বয়।
কোনও মেশিন বা সফ্টওয়্যার জন্য উপরোক্ত বিষয়গুলো অর্জনের জন্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রয়োজন:
রোবট হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এক ধরণের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল যন্ত্র যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা কোন ব্যক্তির নির্দেশে কাজ করতে পারে। এটি তৈরী হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নীতিতে যা Computer program দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
রোবট মানুষ কিংবা বিভিন্ন বুদ্ধিমান প্রাণীর মতো কাজ করতে পারে। এটি মানুষ ও মেশিন উভয় কর্তৃক পরিচালিত কিংবা দূর নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। রোবটের আকৃতি বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। যে রোবট দেখতে মানুষের মত তাকে বলা হয় হিউমেনওয়েড।
রোবটের উল্লেখযোগ্য ব্যবহারগুলো/প্রয়ােগের ক্ষেত্রসমূহ ঃ
১। রোবটকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় কম্পিউটার-এইডেড ম্যানুফেকচারিং এ, বিশেষ করে যানবাহন ও গাড়ি তৈরির কারখানায়।
২। যে সমস্থ কাজ করা স্বাভাবিকভাবে মানুষের জন্য বিপজ্জনক যেমন- বিস্ফোরক নিস্ক্রিয়করণ, ডুবে যাওয়া জাহজের অনুসন্ধান, খনি অভ্যন্তরের কাজ ইত্যাদি কঠোর শারীরিক পরিশ্রমের বা বিপদজ্জনক ও জটিল কাজগুলো রোবটের সাহায্যে করা যায়।
৩। সামরিক ক্ষেত্রেও রোবটের উল্লেখযোগ্য ব্যবহার হচ্ছে বোমা অনুসন্ধান কিংবা ভূমি মাইন সনাক্ত করা।
৪। কারখানায় কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত রোবটের সাহায্যে নানা রকম বিপজ্জনক ও পরিশ্রমসাধ্য কাজ যেমন- ওয়েল্ডিং, ঢালাই ,ভারী মাল উঠানো বা নামানো, যন্ত্রাংশ সংযোজন ইত্যাদির ক্ষেত্রে রোবট বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়।
৫। চিকিৎসাক্ষেত্রে জটিল অপারেশনে ও নানা ধরণের কাজে রোবট সার্জনদের সহায়তা করে থাকে।
৬। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে রোবটের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। মহাকাশ অভিযানে এখন মানুষের পরিবর্তে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্বলিত রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে।
এইচএসসি 2022 তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ৬ষ্ঠ সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর পিডিএফ PDF Download