শিল্প বিপ্লবের ফলে সমাজকর্ম পেশার উত্থান এবং বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মুখোমুখি’ভবিষ্যৎ সমাজকর্মী হিসাবে করণীয় নির্ধারণ

নিচে এইচএসসি 2021 সমাজকর্ম পঞ্চম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন দেওয়া হল।

অ্যাসাইনমেন্টঃ ০৩

দ্বিতীয় অধ্যায়: সমাজকর্ম পেশার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

অ্যাসাইনমেন্টঃ

শিল্প বিপ্লবের ফলে সমাজকর্ম পেশার উত্থান এবং বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মুখোমুখি’ভবিষ্যৎ সমাজকর্মী হিসাবে করণীয় নির্ধারণ।

নির্দেশনাঃ

দৃষ্টান্তসহ শিল্প বিপ্লবের ধারণা

শিল্প বিপ্লবের প্রভাব বর্ণনা (ইতিবাচক ও নেতিবাচক)

সমাজকর্ম পেশার উত্থানে শিল্প বিপ্লবের ভূমিকা

সম্ভাব্য ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের পরিবর্তিত দিকসমূহ ভবিষ্যৎ সমাজকর্মীর

(ক) শিল্পবিপ্লবের ধারণাঃ

শিল্পবিপ্লব প্রত্যয়টির নামকরণ করেছিলেন প্রখ্যাত ইংরেজ ঐতিহাসিক অ্যারনল্ড টয়েনবি ১৮৮৪ সালে তার লেখা “Lectures On the Industrial Revolution in England ” গ্রন্থ প্রকাশিত হলে শিল্পবিপ্লব ধারণাটির ব্যাপক প্রসার ঘটে।শিল্পবিপ্লব হলাে ১৭৬০ সাল হতে ১৮৫০ সালের মধ্যে প্রথমে। ইংল্যান্ড এবং পরবর্তীতে ইউরােপের অন্যান্য দেশে সংঘটিত সদরপ্রসারী কতগুলাে যুগান্তকারী হলাে ১৭৬০ সাল হতে ১৮৫০ সালের মধ্যে প্রথমে ইংল্যান্ড এবং পরবর্তীতে ইউরােপের অন্যান্য দেশে সংঘটিত সুদূরপ্রসারী কতগুলাে যুগান্তকারী পরিবর্তনের সমন্বিত রূপ। ১৭৬০ সাল হতে ১৮৫০ সালের মধ্যে ইংল্যান্ড এবং পরে অন্যান্য দেশে উৎপাদন ব্যবস্থায় যে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসে,তার প্রভাবে একটা গােটা যুগের অবসান হয়ে অন্য একটা নতুন যুগের আবির্ভাব ঘটে।ঐতিহাসিক অ্যারনল্ড টয়েনবি একে শিল্পবিপ্লব নামে আখ্যায়িত করেছেন।

(খ) শিল্পবিপ্লবের প্রভাব(ইতিবাচক ও নেতিবাচক)ঃ

শিল্পবিপ্লবের ইতিবাচক প্রভাবের পাশাপাশি বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে।নিম্ন স্থানে শিল্পবিপ্লবের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরা হলােঃ

ইতিবাচক প্রভাব:

১. শিল্পবিপ্লব শিল্পায়নের সূচনা করে,যা উৎপাদন পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন বয়ে আনে।

২. শিল্পবিপ্লবের প্রভাবে সনাতন যােগাযােগ ব্যবস্থার পরিবর্তে যান্ত্রিক পদ্ধতি প্রবর্তিত হয়।

৩. শিল্পবিপ্লবের প্রভাবে শিল্পায়ন ও নগরায়নের দ্রুত প্রসার ঘটে।

নেতিবাচক প্রভাবঃ

১. শিল্পবিপ্লব কুটির শিল্পকে ধ্বংস করেছে,যৌথ পরিবারের ভাঙ্গন সূচিত করেছে,সামাজিক মূল্যবােধের অবক্ষয় ঘটিয়েছে।

২. শিল্পবিপ্লবের প্রভাবে যে যন্ত্রের আবিষ্কার হয়, তাতে শিশু শ্রমিকদের নিয়ােগের সুযােগ সৃষ্টি হয়।

৩. শিল্পবিপ্লব মানুষকে যান্ত্রিক এবং বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী করে তােলে।

(গ) সমাজকর্ম পেশার বিকাশে শিল্পবিপ্লবের ভূমিকাঃ

পেশাদার সমাজকর্মের মূল উৎস হিসেবে শিল্পবিপ্লবকে চিহ্নিত করা হয়। শিল্পবিপ্লব যেমন মানব সভ্যতার সামগ্রিক রূপ বদলে দেয়,তেমনি পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য তা রেখে,সনাতন সমাজ সেবা কার্যক্রমকে যুগােপযােগী করে গড়ে তােলার প্রয়ােজন সৃষ্টি করে। এরূপ প্রয়ােজন অনুভূত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পেশাদার সমাজকর্মের উদ্ভব হয়। মানব সভ্যতার মতাে সমাজকল্যাণ ধারাকেও শিল্পবিপ্লব দু’ভাগে ভাগ করছে।একটি মানবতাবােধ ও ধর্মীয় অনুশাসনের ভিত্তিতে পরিচালিত প্রাকশিল্পযুগের ঐতিহ্যগত সমাজকল্যাণ ধারা।অন্যটি শিল্পবিপ্লবােত্তর সমাজব্যবস্থার জটিল সমস্যা সমাধানের প্রয়ােজনে উদ্ভূত আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পেশাদার সমাজকর্ম ধারা।

ঘ) সম্ভাব্য ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের পরিবর্তিত দিকসমূহঃ

মানবসভ্যতার ইতিহাসে এখন পর্যন্ত তিনটি শিল্পবিপ্লব পাল্টে দিয়েছে সারা বিশ্বের গতিপথ। প্রথম শিল্পবিপ্লবটি হয়েছিল ১৭৮৪ সালে বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কারের মাধ্যমে। এরপর ১৮৭০ সালে বিদ্যুৎ ও ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেটের আবিষ্কার শিল্পবিপ্লবের গতিকে বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। তবে আগের তিনটি বিপ্লবকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ডিজিটাল বিপ্লব। এ নিয়েই এখন সারা দুনিয়ায় তােলপাড় চলছে। এটিকে এখন বলা হচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। ডিজিটাল বিপ্লবকে কেন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বলা হচ্ছে, সেটি নিয়ে আলােচনার জন্য সারা বিশ্বের রাজনৈতিক নেতা, বহুজাতিক করপােরেট প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, উদ্যোক্তা, প্রযুক্তিবিদ ও বিশ্লেষকেরা জড়াে হয়েছেন সুইজারল্যান্ডের শহর দাভােসে।

সেখানে প্রযুক্তিবিদ ও বিশ্লেষকেরা জড়াে হয়েছেন সুইজারল্যান্ডের শহর দাভােসে। সেখানে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে আলােচনার অন্যতম বিষয় হচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। ডিজিটাল শিল্পবিপ্লবকে নিয়ে সেখানে এখন চলছে আলােচনা-সমালােচনা ও বিশ্লেষণ।

ডব্লিউইএফের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান ক্লাউস শােয়াব চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে নিজের লেখা একটি প্রবন্ধে বলেছেন, ‘আমরা চাই বা না চাই, এত দিন পর্যন্ত আমাদের জীবনধারা, কাজকর্ম, চিন্তাচেতনা যেভাবে চলেছে সেটা বদলে যেতে শুরু করেছে।

ঙ) ভবিষ্যৎ সমাজ কর্মীর করণীয় কাজঃ

যারা সামাজিক কর্মী হতে চায় তাদের অবশ্যই কিছু নরম দক্ষতা আনতে হবে। এক সাধারণত ক্লাসরুম বাইরে এই ব্যক্তিগত গুণাবলী অর্জন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন:

পরিষেবা ওরিয়েন্টেশন: অন্য লােকেদের সাহায্য করার জন্য একটি শক্তিশালী বাসনা অপরিহার্য। সক্রিয় শ্রবণকারী:আপনি তাদের সাথে সাক্ষাৎ করার সময় আপনার ক্লায়েন্টকে আপনার পূর্ণ মনােযােগ দিতে হবে।

ভার্চুয়াল কমিউনিকেশন: আপনার ক্লায়েন্টরা আপনার কাছে তাদের তথ্য, তাদের পরিবার এবং অন্যান্য পরিষেবা প্রদানকারীদের কাছে তথ্য সরবরাহ করতে আপনার উপর নির্ভর করবে।

সক্রিয় শ্রবণকারী: আপনি তাদের সাথে সাক্ষাৎ করার সময় আপনার ক্লায়েন্টকে আপনার পূর্ণ মনােযােগ দিতে হবে। ভার্চুয়াল কমিউনিকেশন:আপনার ক্লায়েন্টরা আপনার কাছে তাদের তথ্য, তাদের পরিবার এবং অন্যান্য পরিষেবা প্রদানকারীদের কাছে তথ্য সরবরাহ করতে আপনার উপর নির্ভর করবে।

আন্তঃব্যক্তিগত দক্ষতা: শ্রবণ এবং বলার দক্ষতা ছাড়াও, আপনাকে সামাজিক দক্ষতাও প্রয়ােজন। • সময় ব্যবস্থাপনা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা : বেশিরভাগ সমাজকর্মীকে বৃহত্তর মামলা দেওয়া হয়েছে, এই দক্ষতা অপরিহার্য।

জটিল চিন্তা : আপনার ক্লায়েন্টদের সমস্যার সমাধান করার সময় আপনার বিকল্প সমাধানগুলির শক্তি এবং দুর্বলতাগুলি ওজন করতে সক্ষম হওয়া আবশ্যক।

আরও দেখুন…